নিউজ ডেস্ক: প্রতি বছর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। এ সময় নদীভাঙনেও বিপুলসংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-পদ্মা, যমুনা ও তিস্তায় তীব্র ভাঙনে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ দিশেহারা।
গত কয়েক দিনে রংপুর, নীলফামারী, পাবনা, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ও টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে শতাধিক ঘরবাড়ি, স্কুল, ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের অন্তত ১২টি জেলা বন্যার পানিতে ভাসছে। এসব জেলায় বন্যা ও নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে নতুন করে নিঃস্ব হয়েছে বহু মানুষ। তাদের অনেকেই এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভাঙন আতঙ্কে অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। রাজবাড়ীতে পদ্মায় ভাঙনের ফলে হুমকিতে পড়েছে চারটি ফেরিঘাট। সেখানে ভাঙন রোধের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বন্যাকবলিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে চাষিরা। কারণ অনেক এলাকায় পানি প্রবেশের কারণে নিম্নাঞ্চলে লাগানো ধান, পাট ও শাকসবজি তলিয়ে যাচ্ছে। বন্যার কারণে ভেসে গেছে বহু পুকুরের মাছ।
প্রতিবেশী দেশগুলোর বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলের একটি অংশ বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পানি আসে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা হয়ে। এছাড়া মেঘনা অববাহিকা ও গঙ্গা-পদ্মা হয়েও আসে প্রচুর পানি। এসব পানিই দেশে বন্যা ও নদীভাঙনের বড় কারণ। এবার নেপাল ও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বন্যা হয়েছে। কাজেই বিশেষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ না নিলে বন্যা ও নদীভাঙনে ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে। বন্যা ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ ও পুনর্বাসনে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে প্রতি বছরই কম-বেশি বন্যা দেখা দেয়। তাই এ বিষয়ে আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি না থাকলে বন্যা ও নদীভাঙনে ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা যাবে না। দেশের নদ-নদীগুলোর নাব্য হ্রাস পেয়েছে। ফলে কম পানিতেই বেশি বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় নদী খননের মাধ্যমে উজান থেকে আসা পলি নিয়মিত ও দ্রুত অপসারণ করতে হবে। সরকারকে এসব দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। একইসঙ্গে গুরুত্ব দিতে হবে টেকসই বাঁধ নির্মাণে।