ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ

0

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীতে ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কীটতত্ত্ববিদরা। তারা বলছেন, এডিস মশা নিধনে সঠিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি রয়েছে।

এখন প্রয়োজন নিবিড়ভাবে ফগিং ও লার্বিসাইডিং করে মশা দ্রুত মেরে ফেলা। এ কার্যক্রমে ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ঢাকায় ডেঙ্গিরোগী বৃদ্ধির মূল কারণ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের ব্যর্থতা।

যখন যে কাজ করা দরকার, দুই সিটি করপোরেশন সেই কাজ করছে না। মূল কাজের চেয়ে লোক দেখানো কাজ বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিতাপের বিষয়, মশা নিয়ন্ত্রণে প্রতি বছর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করলেও সে অনুযায়ী সেবা মিলছে না।

উল্লেখ্য, ২০২০-২১ অর্থবছরে মশক নিয়ন্ত্রণে ব্যয় করা হয়েছে ৯৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। তা সত্ত্বেও এবার ডেঙ্গির মৌসুমে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এডিস মশা। ফলে বাড়ছে ডেঙ্গিরোগীর সংখ্যা। সরকারি হিসাবে ডেঙ্গিরোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে; বাস্তবে এ সংখ্যা অনেক বেশি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বস্তুত করোনা প্রতিরোধে সবাই যখন ব্যস্ত সময় পার করছেন, তখন নীরবে-নিভৃতে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ ডেঙ্গিজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাড়ছে মৃত্যুর হারও। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যসেবা প্রায় ভেঙে পড়ায় অনেকে জ্বর হলেও হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। মূলত এ কারণেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সঠিক চিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে না। ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধি রোধে প্রয়োজন ছিল আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণের।

বিষয়টি এমন নয় যে, ডেঙ্গির মৌসুম এলেই মশা নিধনের কার্যক্রম চালাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বছরজুড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করার পরামর্শ দিয়ে আসছেন অনেক দিন ধরেই। দুঃখজনক হলো, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি।

ডেঙ্গির বিস্তার রোধে সিটি করপোরেশনকে এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলো ধ্বংস করার কাজে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। যেহেতু ডেঙ্গি থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনো প্রতিষেধক বা টিকা নেই; তাই সুরক্ষিত থাকার একমাত্র উপায় হলো মশার কামড় থেকে মানুষকে রক্ষার ব্যবস্থা করা। এজন্য কোথাও যাতে পানি জমে থাকতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব হলো-নগরীর সর্বত্র, বিশেষ করে যেসব স্থানে মশার বংশ বিস্তারের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে, সেসব স্থানে জমে থাকা পানি অপসারণ এবং মশা নিধনের কার্যকর ওষুধ ছিটানোর ব্যবস্থা করা।

যেখানে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, সেখানে স্বভাবতই কয়েকদিন ধরে পানি জমে থাকে। বিশেষত নির্মাণকাজ চলছে এমন জায়গায় এটি বেশি দেখা যায়। এসব জায়গায় জমে থাকা পানি অপসারণের পাশাপাশি নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, এডিস মশা যেন কোনোভাবেই ডিম পাড়ার সুযোগ না পায়। নিরাপদ ও সুস্থ থাকার জন্য সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেক নাগরিক এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে সচেতন ও সতর্ক থাকবেন, এটাই কাম্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here