দাদা-দাদি হতে না পারার আক্ষেপে একমাত্র ছেলের বিরুদ্ধে মামলা

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিয়ের ছয় বছর পেরুলেও ছেলে তাদেরকে নাতি বা নাতনি পাওয়ার খুশি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে, এমন অভিযোগ করে একমাত্র ছেলে বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছেন ভারতের এক দম্পতি।

সম্প্রতি দেশটির উত্তরাখণ্ড রাজ্যে ঘটনাটি ঘটেছে বলে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

আদালতে করা মামলায় সঞ্জীব (৬১) ও সন্ধ্যা (৫৭) প্রসাদ দম্পতি অভিযোগ করেছেন, সন্তানকে বৈমানিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং তার বিয়ের বিশাল আয়োজনের পেছনে তারা নিজেদের সঞ্চয় খরচ করেছেন।

আগামী এক বছরের মধ্যে যদি ছেলের ঘরে নাতি বা নাতনির জন্ম না হয় তাহলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তারা ৫ কোটি রুপি বা সাড়ে ৬ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দাবি করেছেন।

প্রসাদ দম্পতির ছেলে বা ছেলের স্ত্রীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য জানা যায়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।

খুবই অস্বাভাবিক ধরনের এই মামলাটি ‘মানসিক হয়রানি’র অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে।

সঞ্জীব প্রসাদ বলেন, ছেলেকে গড়ে তুলতে তিনি নিজের সব সঞ্চয় খরচ করেছেন। ২০০৬ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে পাইলট হওয়ার প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে ৬৫ হাজার ডলার খরচ করেছেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে বিবিসি লিখেছে, ২০০৭ সালে ছেলে দেশে ফিরলেও চাকরি হারায় এবং দুই বছরের বেশি সময় ধরে ছেলেকে তারা আর্থিক সহায়তা দিয়ে গেছেন।

প্রসাদ দম্পতির একমাত্র ছেলে শ্রেয়ি সাগর (৩৫) শেষ পর্যন্ত পাইলট হিসেবে চাকরি পেয়েছেন। শ্রেয়ির বাবা-মা জানান, ২০১৬ সালে শুভাঙ্গী সিনহার (বর্তমানে ৩১) সঙ্গে ছেলের ঘটা করে বিয়ে দেন। তাদের আশা ছিলো, অবসর জীবনে তারা একজন নাতি অথবা নাতনি পাবেন যার সঙ্গে তাদের সময় কাটবে।

ওই দম্পতি জানান, ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনে পাঁচ-তারকা হোটেল ও বিলাসবহুল গাড়ি ভাড়াতেই ৮০ হাজার ডলারের সমপরিমাণ অর্থ খরচ হয়েছে এবং বিদেশে নবদম্পতির মধুচন্দ্রিমার জন্যও খরচ দিয়েছেন তারা।

সঞ্জীব প্রসাদ বলেন, “আমার ছেলের বিয়ের ছয় বছর পার হয়েছে অথচ এখনও তারা সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেনি। সময় কাটানোর জন্য আমাদের কাছে যদি অন্তত একজন নাতি বা নাতনি থাকতো হয়তো আমরা কষ্ট সহ্য করে চলতে পারতাম।”

প্রসাদ দম্পতির আইনজীবী এ কে শ্রীবাস্তব দ্য ন্যাশনাল-কে বলেন, ‘মানসিক নিষ্ঠুরতার’ শিকার হয়ে এই দম্পতি ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ দাবি করেছেন।

“সব মা-বাবারই স্বপ্ন থাকে, তারা একদিন দাদা-দাদি বা নানা-নানি হবেন। তারা অনেক বছর ধরে অপেক্ষা করে আছেন।”

হরিদ্বারের আদালতে প্রসাদ দম্পতির আরজি জমা দেওয়া হয়েছে এবং ১৭ মে আদালতে শুনানি হতে পারে। এই মামলার বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য তার ছেলে বা তার স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন না।

সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here