নিউ ইয়র্কে গুলিতে নিহত জ্যোতির পরিবারের শোকের মাতম

0

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি: নিউ ইয়র্কে ফরবেল স্ট্রিটের বাসার সামনে গুলিতে নিহত বাংলাদেশি খন্দকার মোদাচ্ছের জ্যোতির পরিবারে আহাজারি থামছেই না, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা।

বুধবার নিউ ইয়র্ক সিটির ওজোনপার্কের সিটি লাইনের ওই বাসায় গিয়ে দেখা যায়, স্বামীকে হারিয়ে আহাজারি করেছেন তার স্ত্রী তাওহিদা ইসলাম তৃষা। পাশেই দাঁড়িয়ে চার বছরের ছেলে নির্বাক।

ছেলের অকাল মৃত্যুতে শোকে বিভোর তার মা ও ভাই। বাংলাদেশ থেকে সেখানে তার বাবার ফেরার কথা ছিল রোববার।

তার দুদিন আগেই ছেলের মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছেন তিনি। নিউ ইয়র্কে তিনি ফিরলেই জ্যোতির দাফনের সিদ্ধান্ত হবে।

৩৬ বছর বয়সী জ্যোতির বাড়ি মানিকগঞ্জে। নিউ ইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের কর্মী ছিলেন তিনি। পরিবার নিয়ে ফরবেল স্ট্রিটের বাসায় থাকতেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, রাত পৌনে ১টার দিকে গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। সেখানে তারা জ্যোতিকে অচেতন অবস্থায় পায়। তার মাথায় গুলি করা হয়েছিল।

নিজের গাড়ির পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা জ্যোতিকে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কারা জ্যোতিকে গুলি করেছিল কিংবা কী কারণে করেছিল, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

তার মৃত্যুর খবরে বুধবার দুপুরে সেখানে বাংলাদেশ কমিউনিটির বাসিন্দা মাজেদা এ উদ্দিন জ্যোতির পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে যান। সেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু শোনেন।

পরিবারের সদস্যরা মাজেদাকে জানিয়েছেন, ১০ ফেব্রুয়ারি জ্যোতি ও তার স্ত্রী তৃষার মার্কিন নাগরিত্ব পাওয়ার সাক্ষাৎকার ছিল। কিন্তু রাতেই ঘাতকের গুলি সব ওলটপালট করে দিয়েছে। কমিউনিটির সদস্যরা শোকার্ত পরিবারের জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন।

মোহাম্মদ কায়সার নামে স্থানীয় একজন বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহে আমি একাধিকবার গুলির আওয়াজ পেয়েছি। আজ (বুধবার) যখন আমি গাড়ি পার্ক করছিলাম, তখন পুলিশ এসে জিজ্ঞাসা করল, আমি কিছু শুনেছি কি না?, আমি বলেছি, হ্যাঁ।”

নিউ ইয়র্কে গুলিতে নিহত বাংলাদেশি খন্দকার মোদাচ্ছের জ্যোতিনিউ ইয়র্কে গুলিতে নিহত বাংলাদেশি খন্দকার মোদাচ্ছের জ্যোতিখায়রুল ইসলাম খোকন নামে স্থানীয় একজন বলেন, গাড়ি ছিনতাইয়ের জন্য জ্যোতিকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার ধারণা।

তিনি বলেন, “বন্দুকের সহিংসতা বেড়েই চলেছে, এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।”

অবশ্য জ্যোতিকে খুন করে পালিয়ে গেলেও তার গাড়িটি নেয়নি খুনিরা।

ব্রুকলীন এবং কুইন্সের সীমান্ত বরাবর ওজোনপার্কের ওই এলাকাটি সিটি লাইন হিসেবে পরিচিত। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট দুপুরে মসজিদে নামাজ শেষে ফেরার পথে সিটি লাইনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মাওলানা আলাউদ্দিন আখঞ্জি ও তারা মিয়া নামের দুই বাংলাদেশি।

আলাউদ্দিন ওজোন পার্ক এলাকার আল-ফোরকান জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন। তার বাড়ি বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায়। আলাউদ্দিনের বন্ধু তারা মিয়ার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গালহাটায়।

তারও আগে ২০১৪ সালের ৯ জুলাই ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজমুল ইসলাম।

সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here