বাংলাদেশিদের ইংল্যান্ডে যাওয়ার পথ খুলছে

0

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় পাঁচ মাস পর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দিচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার, ফলে বাংলাদেশিদের জন্য আবারও ইংল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস শুক্রবার নতুন যে ভ্রমণ নিয়ম ঘোষণা করেছেন, তাতে বাংলাদেশসহ মোট আটটি দেশকে উচ্চ ঝুঁকির ‘রেডলিস্ট’ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বাকি সাতটি দেশ হল: তুরস্ক, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, মিশর, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া এবং ওমান।

আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। নতুন এই নীতিমালা কেবল ইংল্যান্ডের জন্য প্রযোজ্য। স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড নিজেদের নীতি ঠিক করে নেবে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

মহামারীর মধ্যে ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণে রেড, অ্যাম্বার ও গ্রিন- এই তিন রঙের তালিকা করে পৃথিবীর দেশগুলোকে ভাগ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। নতুন নিয়মে ২২ সেপ্টেম্বরের পর রেড লিস্টে থাকবে ৫৪টি দেশ। এই তালিকা থেকে মুক্ত হয়ে আটটি দেশ যাবে অ্যাম্বার লিস্টে। অক্টোবর থেকে অ্যাম্বার লিস্ট বলে কিছু আর থাকবে না। রেড লিস্টের বাইরে বাকি সব গ্রিন।

অর্থাৎ, লাল তালিকায় থাকা ৫৪টি দেশ থেকে বিদেশিরা তখনও ইংল্যান্ডে যেতে পারবেন না। সেসব দেশ থেকে কোনো ব্রিটিশ নাগরিক দেশে ফিরলে ১০ দিনের কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মানতে হবে।

আর সবুজ তালিকার দেশগুলো থেকে ইংল্যান্ডে যেতে কোনো বাধা থাকবে না। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে সবুজ তালিকার কোনো দেশ থেকে সেখানে যাওয়ার আগে কোভিড পরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতাও থাকছে না। সেখানে গিয়েই তারা পরীক্ষা করাতে পারবেন।

ব্রিটেনে বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, তাদেরকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ অ্যাম্বার লিস্টে থাকবে।

“২২ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টা থেকে বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা ইংল্যান্ডে ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে অ্যাম্বার লিস্টে থাকার সময়টায় ১০ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।”

অক্টোবর থেকে দুই ডোজ টিকা পাওয়া যাত্রীদের ইংল্যান্ডে নামার পর পিসিআর পরীক্ষার বাধ্যবাধকতাও শিথিল হেবে। তখন তারা তুলনামূলকভাবে সস্তা ল্যাটারাল ফ্লো টেস্ট করালেই হবে। তবে যাদের দুই ডোজ টিকা দেওয়া থাকবে না, তাদের পিসিআর পরীক্ষাই করাতে হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ৯ এপ্রিল বাংলাদেশের নাম ঝুঁকিপূর্ণ দেশের লাল তালিকায় তুলেছিল যুক্তরাজ্য। ফলে বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়ার সুযোগ ছিল না।

এ পরিস্থিতিতে প্রায় সাত হাজার ব্রিটিশ-বাংলাদেশির আটকা পড়ায় রেড লিস্ট থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

সদ্য বিদায়ী ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে ৭ সেপ্টেম্বর এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশকে রেড লিস্ট থেকে সরানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসার পরও বাংলাদেশকে ওই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাখার সিদ্ধান্তকে ‘বৈষম্যমূলক’বলেছিলেন তিনি।

শুক্রবার নিষেধাজ্ঞা শিথিলের ঘোষণা আসায় ব্রিটিশ সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন এক ভিডিওবার্তায় বলেন, “আমি খুব আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি, আজকে ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশকে রেড লিস্ট থেকে অ্যাম্বারে নিয়ে এসেছে। ব্রিটিশ সরকারকে সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।”

সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here