বিদেশি নারীর উপহারের বইয়ে হাতের লেখা ‘মিলে যাচ্ছে’ বাবুলের সঙ্গে

0

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: বিদেশি এক নারীর কাছে থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া বইয়ের লেখার সাথে বাবুল আক্তারের হাতের লেখার ‘মিল পাওয়া গেছে’ বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

আদালতের নির্দেশে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বাবুল আক্তারের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ করে ওই বইয়ের লেখার সঙ্গে মিলিয়ে দেখে। সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন পিবিআই হাতে পেয়েছে।

পিবিআই প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিআইডি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তাতে নমুনা হাতের লেখার সাথে বইতে থাকা লেখার মিল পাওয়া গেছে।”

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যার ঘটনায় যে মামলা করেছিলেন, সেই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি এখন কারাগারে আছেন।

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের অভিযোগ, পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে বাবুল খুন করান তার স্ত্রীকে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বইটি মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করে বাবুল আক্তারের ইংরেজি হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ করার আবেদন করেছিল পিবিআই।

সে অনুযায়ী গত ২২ মার্চ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মুহাম্মদ আবদুল হালিমের খাস কামরায় বাবুলের ইংরেজি হাতের লেখার নমুনা নেওয়া হয়। এরপর তা সিআইডির পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সিআইডির দেওয়া প্রতিবেদন এবং তাতে থাকা বিশেষজ্ঞ মতামত আমরা পেয়েছি। সেখানে কী আছে তা আমরা আদালতকে অবহিত করব।”

হস্তাক্ষরের ক্ষেত্রে ১২ ধরনের বৈশিষ্ট্য তুলনা করা হয়, সেসব পরীক্ষা করে বই ও নমুনা হাতের লেখায় যেসব মিল পাওয়া গেছে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বলে পিবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বাবুলের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহের আবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত বিদেশি নারীর সঙ্গে বাবুল আক্তারের ‘সম্পর্ক’ ছিল। তিনি বাবুলকে আহমেদ রশিদ রচিত ইংরেজি ভাষার ‘তালিবান’ নামে একটি বই উপহার দেন।

ওই বইয়ের তৃতীয় পাতায় সেই নারীর নিজের হাতের লেখায় এবং বইয়ের শেষের খালি পৃষ্ঠায় ইংরেজিতে বাবুল আক্তারের হাতে লেখায় তাদের ‘প্রথম সাক্ষাতের’ বিষয়সহ কিছু তথ্য লেখা আছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন সেসময় পুলিশ সুপার পদে থাকা বাবুল আক্তার।

মিতু হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খোদ বাবুলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে গত ১২ মে তার করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এরপর সেদিনই বাবুলসহ নয়জনকে আসামি করে নতুন হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে ২৫ জানুয়ারি আদালতে মিতুর বাবার করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এখন বাবুলের করা মামলাতেই তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তদন্ত চলছে।

সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here