শসায় লাভবান কৃষক

0

প্রতিনিধি: সালাদ তৈরির প্রধান উপকরণ শসা। অনেকের কাছে এ সবজি চৈত্রের খরতাপে ক্ষুধা ও তৃষ্ণা নিবারণের দারুণ টনিক হিসাবে কাজ করে। বাজারেও সবজিটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর সব সময় শসার চাহিদা থাকায়, কৃষকেরাও এ সবজি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।

ময়মনসিংহের নান্দাইল ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের কৃষকদের কাছে চৈত্রের মঙ্গা কাটানোর ফসল হিসাবে প্রিয় হয়ে উঠেছে শসা।

গত বুধবার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর, বীর বেতাগৈর, চর বেতাগৈর ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার, মগটুলা, রাজীবপুর ইউনিয়নের কিছু গ্রাম ঘুরে শসা আবাদের এ চিত্র দেখা গেছে।

নান্দাইল-ত্রিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে দাঁড়িয়ে কথা হয়, মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের বাহাদুর নগর গ্রামের কৃষক মো. সিদ্দিক মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি দশ শতক জমিতে শসা আবাদে প্রায় ১২ হাজার টাকার মতো খরচ পড়ে। ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে ফলন উঠতে শুরু করে। বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকাররা এখানে এসে দেখে শুনে শসা কিনে নিয়ে যান। তিনি আরও বলেন, পুরো মাস ধরে শসা বিক্রি করা হয়। তাই এ ফসলটি কৃষকদের কাছে লাভজনক হয়ে উঠছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শসা বীজ লাগানো হয়েছে জমির সমতল মাটি থেকে প্রায় এক-দেড় ফুট উঁচুতে। এই উচ্চতা তৈরি করা হয়েছে জমির মাটি কেটে স্তুপ করে।

কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যদি অসময়ে বৃষ্টি হয় তাহলে জমিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। পানি জমলে গোড়া পচে শসা গাছ মরে যাবে। সে জন্য মাটি কেঁটে স্তুপ করে এই উচ্চতা তৈরি করা হয়েছে। আবার খরতাপে মাটি শুকিয়ে গেলে তখন জমে থাকা বা সেচের পানি কাজে লাগানো যায়।

কৃষক ফজলুল হকের স্ত্রী নার্গিস আক্তার (২৫) জানান, দিনে একবার হলেও তিনি জমি দেখতে আসেন। তাঁর স্বামী ২০ শতক জমিতে শসা আবাদ করেছেন। গত বছর আগুনে বাতাসে শসা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এবার যে ফলন হয়েছে তা বাজারে বিক্রি করতে পারলে গতবারের ক্ষতি পুষিয়েও লাভ হবে। অন্য কৃষকেরা শসা ছাড়াও লাউ, মিষ্টি কুমড়া, করলা চাষ করেছেন। এ তিনটি সবজির বাজারে বেশ দাম। করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। লাউ প্রতিটি ৩০-৪০ টাকা, ছোট সাইজের একটি মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়

নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সাধন গুহ মজুমদার জানান, চাষাবাদের ক্ষেত্রে কৃষকেরা অনেকটা কৌশলি হয়ে উঠছেন। তাঁরা নিচু জমিতে ধান চাষের পাশপাশি মওসুম ভিত্তিক সবজি আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। উৎপাদিত ফসল বিক্রির জন্য ক্রেতাকে উৎপাদনস্থলে টেনে আনছেন। এতে বুঝা যায়, কৃষকেরা নিত্যনতুন কৃষি

প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। আবার তাঁরা চৈত্র মাসের মঙ্গার থাবা থেকে নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে পারছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here